নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৩ জুন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেই নব চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে উঠতেন স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রাচীনতম এই দলের প্রতিটি নেতাকর্মী। তাইতো মাত্র এক বছর আগেও ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে ঘিরে মেতে উঠেছিল গোটা নগরী। সকাল থেকে বাদ্যযন্ত্র আর স্লোগানে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছিল শহর। সৃষ্টি হয়েছিল এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
কিন্তু ঐতিহ্যবাহী সেই দলটির ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছিলোনা কোন উত্তাপ-আমেজ। বরাবরের মত দলীয় কার্যালয়ে দেখা মেলেনি একটি কর্মীরও। অনেকটা গোপনীয়তা বজায় রেখে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের প্রতি। যেখানে নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দলে দলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতেন, সেখানে মাত্র দু’জন মিলে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহান এই নেতাকে। শুধু তাই নয়, দিবসটি উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা ওড়াতেও আসেননি কেউ। আর এসব কিছুই হয়েছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে। কেন্দ্রের নির্দেশনা মানতেই বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অনেকটা গোপনীয়ভাবেই সীমিত আকারে পালন করেছে দলের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
দলীয় সূত্রে জানাগেছে, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে সীমিত কর্মসূচি ঘোষণা করে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের প্রতিটি জেলা এবং উপজেলাগুলোতে কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি এবং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নগরীর সদর রোডস্থ শহীদ সোহেল চত্বরে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দলীয় কোন নেতা-কর্মী না থাকায় কার্যালয়ের দায়িত্বরত অফিস সহকারী উত্তোলন করেন পতাকা। এরপর থেকেই নীরব দলীয় কার্যালয়।
তার মধ্যেই দুপুর সোয়া ১টার দিকে চুপিসারে দলীয় কার্যালয়ে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। এরপরে আর কারোই দেখা মেলেনি ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তাই সরকারের স্বাস্থ্যবিধি যাতে লঙ্ঘন না হয় সে জন্যই কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি এবং মেয়র মিলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাছাড়া দলীয়ভাবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া-মোনাজাত কর্মসূচির পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু গণজমায়েত হবে ভেবে শেষ পর্যন্ত তাও করা সম্ভব হয়নি। এদিকে শুধু জেলা ও মহানগরই নয়, বরং গোটা দক্ষিণাঞ্চলেই জমকালো আয়োজন ছাড়াই সীমিত আকারে পালন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। তবে কোন কোন উপজেলায় সীমিতভাবেও কর্মসূচির আয়োজন ছিল না বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে করোনার প্রভাবে নীরবেই কেটে গেছে আওয়ামী লীগের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
Leave a Reply